বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার বিবরণী
প্রকৃতি ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে কৌতুহলী হয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে এর রহস্য উদ্ঘাটন করা ও এর অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য উপলব্ধি করা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনমানের উন্নয়ন করা এবং জাতীয় ও বৈশ্বিক কল্যাণে ইতিবাচক অবদান রাখা ।
বিষয়ের ধারণায়ন
বিজ্ঞান সমাজ বা প্রকৃতির বাইরে কোন পৃথক বিষয় নয়, বরং প্রকৃতির ঘটনাবলিকে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে বুঝতে চেষ্টা করা বিজ্ঞান শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য। কাজেই এই রূপরেখায় বিজ্ঞান শিক্ষাকে শুধু তত্ত্ব ও তথ্য এবং পরীক্ষাগারে নির্ধারিত কিছু পরীক্ষণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি বরং বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা অর্জনের
উপর জোর দেয়া হয়েছে— যা শিক্ষার্থীর মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিজ্ঞানভিত্তিক জীবনাচরণের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
শিক্ষাক্রমের বিষয় হিসেবে বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য, গুরুত্ব এবং সংশ্লিষ্ট শিখন-ক্ষেত্রসমূহ বিবেচনায় নিম্নলিখিতভাবে এর ধারণায়ন করা হয়েছে-
বিজ্ঞান অনুসন্ধানমূলক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে বিশ্বপ্রকৃতির রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালায়। এই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য স্কেল, অনুপাত ও পরিমাণের ধারণার প্রয়োজন পড়ে। কোন সিস্টেমে ঘটে চলা ঘটনাবলি ব্যাখ্যা করার জন্য ওই সিস্টেমকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হয়, বিবেচনায় নিতে হয় সিস্টেম ও এর উপাদানসমূহের গঠন ও আচরণ, তাদের স্থিতি ও পরিবর্তন, এবং সিস্টেমের ভেতরে চলতে থ াকা বস্তু ও শক্তির মিথস্ক্রিয়া। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত প্রমাণনির্ভর তথ্যের ভিত্তিতে এসব ঘটনার প্যাটার্ন ও কার্যকারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত জ্ঞান বারবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর একটা সময় বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সময়ের সঙ্গে উদ্ঘাটিত বৈজ্ঞানিক তথ্য, তত্ত্বের সমন্বয়ে বয়ে চলা বিজ্ঞানের মূল স্রোত থেকে ক্রমান্বয়ে তিনটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র উন্মোচিত হয় : ভৌতবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান এবং পৃথিবী ও মহাকাশবিজ্ঞান । এই তিনটি বিশেষায়িত ক্ষেত্রের বাইরেও আরেকটি আলোচনার ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তা হল বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সমাজ।
বিজ্ঞানের তথ্য দিয়ে ভারাক্রান্ত করে নয়, বরং অনুসন্ধানমূলক শিখনের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানের দর্শন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ইত্যাদির উপর সম্যক ধারণা নিয়ে শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞানভিত্তিক জীবনাচরণে অভ্যস্ত করে তোলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। এর ফলে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে তারা দৈনন্দিন জীবনে বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করে বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে পারবে ও বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক (Socio-scientific) মূল্যবোধ ধারণ করে ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক ক্ষেত্রে দায়িত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল আচরণ করবে ।
বিজ্ঞান বিষয়ের ধারণায়নে উঠে আসা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিতভাবে নিচে আলোকপাত করা হল ।
বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান : প্রতিটি ব্যক্তি জন্মগতভাবে অনসুন্ধানী মন নিয়ে জন্ম নেয়। সমাজ এবং প্রকৃতির বিভিন্ন বস্তু এবং ঘটনা তাঁর কৌতুহলী মনকে আরো বেশি নাড়া দেয়। সে জানতে চায় এর কারণ কী? এর পেছনের ঘটনা কী? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যে পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয় তা হল বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান । বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান হল কিছু কৌশলের সমন্বয়ে একটি সুসংহত পদ্ধতি, যার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করা হয়। এ পদ্ধতি আয়ত্ত করতে হলে শিক্ষার্থীকে একটি যৌক্তিক, নিয়মতান্ত্রিক ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় যা তাঁকে বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলে । সঠিকভাবে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পরিচালনার জন্য কিছু বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি আয়ত্ত করা প্রয়োজন :
বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি : বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন হয় একটি কৌতুহলী মনের যা প্রতিটি শিশুর মধ্যে বিদ্যমান। পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের পদ্ধতি আয়ত্ত করার জন্য শিক্ষার্থীর মধ্যে কিছু প্রক্রিয়াকরণ দক্ষতা থাকা অত্যাবশ্যক, যা তাঁর অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে আরো বেশি শাণিত করে। আর এ দক্ষতাগুলোকেই বৈজ্ঞানিক দক্ষতা হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে । যেহেতু বিজ্ঞানের তত্ত্ব ও তথ্যসমূহ শুধুমাত্র প্রমাণের ভিত্তিতেই গৃহীত হতে হয়, কাজেই
নিরপেক্ষতা ও বস্তুনিষ্ঠতার মত কিছু বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করাও সঠিকভাবে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পরিচালনার পূর্বশর্ত।
স্কেল, অনুপাত ও পরিমাণ : যেকেনো বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের পরিকল্পনা নির্ধারণ করতে মাইক্রো বা ম্যাক্রো স্কেলের শর্তাবলি বিবেচনা করা জরুরি, কারণ অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় কী কী বিষয় প্রাসঙ্গিক তা অনেক সময় এই শর্তাবলির সাপেক্ষে ভিন্ন হতে পারে। অন্য দিকে, এই অনুসন্ধান পরিচালনা করতে বিভিন্ন পরিমাণ সম্পর্কে জ্ঞান, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ধরনের পরিমাণ পরিমাপ করার দক্ষতা প্রয়োজন পড়ে। আবার এই স্কেল, অনুপাত ও পরিমাণের ভিন্নতা প্রকৃতির বস্তু বা ঘটনার উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে তাও বিজ্ঞানের আলোচনার বিষয়। তাই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের জন্য এবং বিজ্ঞানের তত্ত্ব ও ধারণাসমূহ অনুধাবন করার জন্য স্কেল, অনুপাত ও পরিমাণের ধারণা থাকা প্রয়োজন ।
সিস্টেম : শিক্ষার্থী তাঁর অনুসন্ধানী চোখে দেখতে পায় তাঁর চারপাশ থেকে শুরু করে ক্ষুদ্রাকার অণু পরমাণু এবং বৃহদাকার বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সবকিছুই এক একটি সিস্টেম, প্রতিটি বৃহৎ সিস্টেম আবার অসংখ্য সাবসিস্টেমের সমষ্টি। যেকোনো সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ সজীব এবং অজীব বস্তুসমূহের গঠন ও আচরণ, এর মধ্যকার বস্তু ও শক্তির মিথষ্ক্রিয়া, সিস্টেম ও এর উপাদানসমূহের স্থিতি ও পরিবর্তন ইত্যাদির প্যাটার্ন ও কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে বের করাই বিজ্ঞানের কাজ।
■ গঠন ও আচরণ : প্রকৃতির সজীব ও অজীব বস্তুসমূহের গঠন বিশ্লেষণ, এবং তার ভিত্তিতে তাদের আচরণ ও কার্যাবলি পর্যালোচনা।
বস্তু ও শক্তির মিথস্ক্রিয়া : কোন সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ বস্তু ও শক্তির পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া এবং তা কীভাবে সিস্টেমকে প্রভাবিত করে তার অনুসন্ধান ।
■ স্থিতি ও পরিবর্তন : প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম সিস্টেমের স্থিতাবস্থায় থাকার শর্তাবলি এবং এর বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন বা বিবর্তনের অনুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ ।
প্যাটার্ন : প্যাটার্ন হচ্ছে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে কোন বিষয় বা প্রাকৃতিক ঘটনার বার বার পুনরাবৃত্তি। প্রকৃ তির বস্তু ও ঘটনাবলির প্যাটার্ন তাদের ধরন অনুযায়ী শ্রেণিবদ্ধ করতে সাহায্য করে। নির্দিষ্ট প্যাটার্ন অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব ঘটনার পারস্পরিক সম্পর্ক উদ্ঘাটন করা যায়।
কার্যকারণ সম্পর্ক : যেকোনো প্রাকৃতিক ঘটনার পেছনের কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে বের করা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্রকৃতিতে কোন ঘটনা কেন ঘটে, কী ধরনের মিথস্ক্রিয়া এর পেছনে কাজ করে তার পরীক্ষালব্ধ ব্যাখ্যা বিশ্বপ্রকৃতি কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে সাহায্য করে।
বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক ঘটনাবলি ব্যখ্যা করতে গিয়ে ক্রমান্বয়ে তিনটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়। এর মধ্যে –
- ভৌত বিজ্ঞান হলো বস্তু ও বস্তু কণার গঠন আচরণ, মিথষ্ক্রিয়া, স্থিতি ও পরিবর্তন সম্পর্কিত;
- জীববিজ্ঞান হলো সজীব উপাদানের গঠন আচরণ, মিথষ্ক্রিয়া, স্থিতি ও পরিবর্তন সম্পর্কিত; এবং
- পৃথিবী ও মহাকাশ বিজ্ঞান হলো পৃথিবী থেকে শুরু করে সমগ্র মহাবিশ্বের গঠন এবং প্রকৃতি সম্পর্কিত।
- এই তিনটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র ছাড়াও আরেকটি প্রায়োগিক আলোচনার ক্ষেত্র হল বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, এবং সমাজ (Science, Technology & Society, সংক্ষেপে STS)। প্রাত্যহিক জীবনে এবং মানবসভ্যতার
অগ্রযাত্রায় বিজ্ঞানের নানাবিধ প্রয়োগ, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার প্রভাব – এখানে মুখ্য আলোচ্য বিষয়।
উপর্যুক্ত আলোচনার ক্ষেত্রগুলো ঘিরে বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষাক্রম আবর্তিত হবে। অনুসন্ধানমূলক শিখনের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমান্বয়ে বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা গড়ে তোলা এই শিক্ষাক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য। পাশাপাশি অন্যতম উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা ।
বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা : একটি বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতাসম্পন্ন সমাজ গড়ে তোলা বিজ্ঞান শিক্ষার চূড়ান্ত লক্ষ্য । এই শিক্ষাক্রমে তাই অনুসন্ধানমূলক শিখনের উপর জোর দেয়া হয়েছে, যাতে বিজ্ঞান শিক্ষা শুধু বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব জানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে; বরং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অনুসন্ধিৎসা, প্রক্রিয়াকরণ দক্ষতা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে। ফলাফলস্বরূপ, শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি হবে এবং প্রাত্যহিক জীবনে, কিংবা যেকেনো সমস্যা সমাধানে বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব পড়বে। বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে এই চর্চা শিক্ষার্থীর মাঝে ধীরে ধীরে বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতার একটি অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীর মেটাকগনিটিভ দক্ষতাসমূহকে।
মেটাকগনিশন : মেটাকগনিশনকে সহজ ভাষায় বলা চলে Learning to learn; কী শিখবে, কীভাবে শিখবে, কীভাবে মূল্যায়িত হবে, অর্থাৎ সমগ্র শিখন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থী পূর্ণ সচেতনভাবে নিজেই ব্যবস্থাপনা করবে এবং প্রতিফলনমূলক শিখনের দক্ষতা অর্জন করবে। অনুসন্ধানমূলক বিজ্ঞান শিখন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেটাকগনিটিভ দক্ষতাসমূহ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। মেটাকগনিটিভ শিখনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী জীবনব্যাপী শিখনের জন্য যোগ্য হয়ে ওঠে এবং বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে নিজের পরবর্তী শিখনের দায়িত্ব নেবার উপযুক্ত হয়ে গড়ে ওঠে।
বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক (Socio-scientific) মূল্যবোধ : এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার কথা বার বার ব্যক্ত হয়েছে। বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় শুধু বিজ্ঞান বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনায় নয়, বরং জীবনের সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে। সেজন্য এই ফ্রেমওয়ার্কে বিজ্ঞানলব্ধ সামাজিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান শিক্ষায় বিজ্ঞানমনস্কতার চর্চার পাশাপাশি শিক্ষার্থীর মধ্যে ক্রস-ডিসিপ্লিনারি মূল্যবোধগুলো গড়ে তোলাও জরুরি। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিক্ষার্থী যাতে করে তার আশেপাশের পরিবেশ এবং তার উপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাবকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করে এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক বিভিন্ন সমস্যার বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানের চেষ্টা করে। বৈজ্ঞানিক মূল্যবোধ ধারণ করার মাধ্যমে তারা বিজ্ঞানের দর্শনকে নিজের সংস্কৃতিতে আত্তীকৃত করতে পারবে, পাশাপাশি প্রকৃতি, পরিবেশ ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য সম্পর্কে কৌতুহলী হবে, বৈচিত্র্যকে সম্মান করবে। প্রাকৃতিক ও সামাজিক সকল ইস্যুর বিশ্লেষণে বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় দেবে; বিজ্ঞানের প্রকৃতি ও সৌন্দর্য্য হৃদয়ঙ্গম করবে এবং নিজেকে বিশ্বপ্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উপলব্ধি করতে পারবে।
===000===
তথ্যসূত্র : শিক্ষাক্রম রুপরেখা-2021