সকালে অফিসে প্রবেশের একটু পরেই দুজন শিক্ষার্থী নতুন শিক্ষাক্রমের বিরুদ্ধে প্রচারণার অংশ হিসেবে আমার কাছে এলেন। তারা একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্য। আমি কৌতুহল থেকেই বর্তমান শিক্ষাক্রম সম্পর্কে তাদের ধারণাগুলো স্পষ্ট করতে বললাম। তাদের একটাই বক্তব্য, এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করবে। শিক্ষাক্রমে কী কী বিষয় আছে যা ক্ষতিকর এবং শিক্ষার্থীদের কী কী ক্ষতি হবে তার একটি তালিকা আমাকে দিলে সেটি সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবো বলে একটি রাইটিং প্যাড ও কলম এগিয়ে দিয়ে তাদের জন্য চা আনতে বললাম। তারা লিখতে রাজি নয়,তাই আমি নিজে লিখবো বলে কলম তুলে নিলেও পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়েছে এবং গ্রামের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে এটা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারলো না। নতুন কারিকুলামের আওতায় লেখা বইগুলো দেখেছে কিনা আমার এমন প্রশ্নবাণে উৎকন্ঠিত ওরা ঘামতে লাগলো। কাজের তাড়া দেখিয়ে একরকম দৌড়ে আমার রুম থেকে চলে গেলো। হতভম্ব আমি ওদের কাছে না বলা কথাগুলো নিজের সাথেই বলতে শুরু করলাম।
পঞ্চাশোর্ধ্ব জীবনে যখন পেছন ফিরে যখন তাকাই, তখন উপলব্ধি করি, আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনে আমি কখনোই শিক্ষার্থী ছিলাম না, ছিলাম পরীক্ষার্থী মাত্র। ছাত্র হিসেবে আমার প্রধান কর্তব্য ছিলো পাঠ্যবইয়ের পাতার পর পাতা মুখস্থ করা, তৈরি প্রশ্নের উত্তর গলাধঃকরণ ও যথারীতি পরীক্ষার হলে খাতায় সেগুলো বমি করা। আমার পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ খাতায় উগরে দেয়া সেই বমিগুলোই পরিমাপ করতেন। বমির পরিমাণ, গন্ধ, রং বৈচিত্র এগুলোই তাদের বিচার্য বিষয় ছিলো। আর আমরাও দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য খাতায় নানান কালি, মার্জিন ও রং ব্যবহার করে উগরে দেয়া তথ্যগুলোকে নানান অলংকরণে সাজিয়ে দিতাম। এই প্রক্রিয়ায় আমার সহপাঠী বন্ধুরাই ছিলো আমার প্রতিযোগী। বার্ষিক পরীক্ষার আগে ছোট ফুফু দাঁড়িয়ে থেকে শেখাতেন কিভাবে একটি লাইন লিখেই সেটি প্রশ্নের নীচে ঢেকে ফেলতে হয়, যাতে আশেপাশের কেউ দেখতে না পারে। পরীক্ষার পরবর্তী সময়ের আনন্দ আগের ক্লাসের পজিশন ধরে না রাখতে পারার আশংকায় ম্লান হয়ে যেতো। ফলাফলের দিন সবাই মিলে আনন্দ করতে পারিনি। কখনও আমি জিতেছি, কখনওবা আমার অন্য বন্ধুরা।
শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর শিক্ষকতা পেশায় আসার পর নিজেও সেই বমি ঘাঁটাঘাটির প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে গেছি। চোখের সামনেই দেখেছি কিভাবে অসহায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তথাকথিত স্বপ্ন পূরণের আশায় আমার সহকর্মী শিক্ষকদের পেছনে হন্যি হয়ে ছুটছেন। আমাদের সময়ে প্রযুক্তির প্রসার না ঘটায় নিয়মের বেড়াজাল এড়িয়ে উপভোগের অনেক সময় অবশিষ্ট থাকতো। কিন্তু নিজে এখন দুটি সন্তানের অভিভাবক হিসেবে শিক্ষা বাণিজ্যের আগ্রাসী সম্প্রসারণ এর কদর্য চেহারা প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষক কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় নিজের সন্তানকে নিয়ে আমার হেনস্থার বহুমূখী অভিজ্ঞতা আর সকলের মতো একই হবে। এইতো কদিন আগেও আমাদের অভিভাবকগণ কোচিং বাণিজ্য আর গাইডবুক বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সারাখন উচ্চকিত ছিলেন। সুযোগ পেলেই সরকারকে তুলোধূনো করতে পিছপা হতেন না। আমরা যারা শিক্ষকতার পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সাথে যুক্ত, তারা গত একযুগ ধরেই শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দঘন, জীবনমুখী একটি শিক্ষাক্রমের স্বপ্ন দেখেছি। উন্নত ও স্বল্পোন্নত ডজনখানেক দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তুলনা করে দেখেছি, আমাদের কারিকুলামে জ্ঞানের কচকচানি অনেক বেশি। কিন্তু এটি শিক্ষার্থীর সক্ষমতা আর দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ইতিবাচক ছাপ ফেলে না। অথচ আজকের বিশ্বে ‘কী জানেন’ এটি নয়, ‘কী পারেন’ এটিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কোচিং ও গাইড বই নির্ভর এই শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আমাদের অভিভাবকদের মানসিকতাও কম দায়ী নয়। আমরা সন্তানদের স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য এসবের দিকে লক্ষ্য না করে তাদের আমাদের ইচ্ছা পূরণের পুতুল ভাবতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তাই আমাদের স্বপ্নের নীচে সন্তানদের স্বপ্ন চাপা পড়ে যায়। যেই ছেলেটি ফুটবলে লাথি মেরে বিখ্যাত হবার জন্য জন্ম নিয়েছিল,বা একটি সিনেমা বানিয়ে জগৎ বিখ্যাত হতে পারেতো, অংকে বা ভূগোলে সে একটু কাঁচা থাকলে পৃথিবীর কোনো ক্ষতি হতো না। কিন্তু তাকে সব বিষয়ে পটু বানাতে গিয়ে আমরা একদিকে একজন কীর্তিমানকে হারিয়ে ফেলি অন্যদিকে একজন মধ্যম বা নিম্নমানের পেশাজীবী তৈরি করি। অসফল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, শিক্ষক বা অন্য কোনো পেশাজীবির চাইতে সফল একজন শিল্পী, কবি, কারিগর বা উদ্যোক্তা জীবনকে অনেক সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারে এই সত্যটা আমরা ভুলে থাকতে চাই। সন্তানের অনাগত ভবিষ্যতকে নিরাপদ করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই তাকে জীবনব্যপী মানসিক প্রতিবন্ধিতার দিকে ঠেলে দেই।
নতুন শিক্ষাক্রমে “অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষা”কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আমি লক্ষ্য করেছি, প্রাথমিকের পরিবর্তন নিয়ে অভিভাবকরা অতটা উচ্চকিত নন। যত আলোচনা ষষ্ঠ ও সপ্তমের পাঠ্যপুস্তক নিয়ে। এর কারণ প্রত্যাশার চাপটা এই শ্রেণীর শিক্ষার্থী থেকেই শুরু হয়। ফলে তারা অবচেতনেই শিক্ষা বাণিজ্যের শিকারে পরিণত হয়। তাদের কৈশোরের সোনালী সময়গুলো এক অসহনীয় শারিরীক ও মানসিক চাপের মধ্যে পার হয়ে যায়। এর দীর্ঘ মেয়াদি শারিরীক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে এদেশে তেমন কোনো গবেষণা নেই, তবে উন্নত দেশে আছে বলেই তারা শিক্ষক কেন্দ্রিক পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে। অনুন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে যাওয়া আমাদের দেশ আজ সেই পথে হাঁটার সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমাদের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া সন্তানরা সকালে কোচিং এর পর স্কুল অথবা স্কুল এর পর কোচিং করে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে ঘরে ফিরছে না। বিশ্রাম না নিয়েই আবারও বই নিয়ে মুখস্থের কসরত অথবা টিউশন টিচারের কাছে পড়তে বসছে না। বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিছে, ভাই বোনদের সাথে গল্পে মেতে উঠেছে। মুখস্থের পরিবর্তে স্কুলের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে নানা উপকরণ তৈরি করছে। ওদের চোখে ক্লান্তি আর প্রতিযোগিতা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার ছাপ দেখতে না পেয়ে অনভ্যস্ত অভিভাবকগণ সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে আরো বেশি দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন।
এই দুঃশ্চিন্তার মূল কারণ প্রতিযোগিতায় সন্তানের হেরে যাবার আশংকা। কিন্তু তার সন্তান ইতোমধ্যেই জেনে গেছে ক্লাসের সহপাঠীদের সাথে তার সম্পর্ক প্রতিযোগিতা নয়, সহযোগিতার। ফলে তারা সবাই মিলে শিখছে। এই শেখা শিক্ষার্থী ভেদে কম বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক (বিএনকিউএফ) বাস্তবায়ন শুরু করেছে। ৮ম শ্রেণী থেকে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট লেভেলে জাতীয় দক্ষতা মান অর্জন করবে। এতে করে শিক্ষার্থী একাডেমিক সনদের পাশাপাশি একটি দক্ষতা সনদও অর্জন করবে। ফলে যে কোনো স্তরে শিক্ষায় ছেদ পড়লেও অর্জিত দক্ষতা তাকে কর্মক্ষেত্রে অসহায় করে তুলবে না। আর একাডেমিক শিক্ষা হবে জীবনব্যপী; যখনই সুযোগ হবে যে কেউ আবারও পড়াশোনায় ফিরে আসতে পারবে। আমাদের শিক্ষার্থীরাও পরিবারের বোঝা না বাড়িয়ে উন্নত বিশ্বের মতো নিজেরাই উপার্জন ও অধ্যয়ন এক সাথেই চালিয়ে যাবার সুযোগ পাবে।
অভিভাবকদের আরেকটি আশংকা, নতুন কারিকুলামে অধ্যয়নরত আমাদের সন্তানরা উচ্চশিক্ষা ও চাকুরীর বাজারে পিছিয়ে যাবে। আসলে এই কারিকুলাম সম্পন্ন হবার সাথে সাথে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি পদ্ধতি ও চাকুরির ইন্টারভিউতেও ব্যপক পরিবর্তন আসবে। একাডেমিক সার্টিফিকেট নয়, যোগ্যতা সনদের দিকেই চাকুরিদাতাদের নজর থাকবে। কোন বিষয়ে কী ফলাফল নিয়ে পাশ দিয়েছে তা নয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাজের ক্ষেত্রগুলোতে অবদান রাখার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা রয়েছে কিনা সেটিরই মূল্যায়ন হবে। গুগল, মেটা, অ্যামাজন,অ্যাপেল এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এখন সার্টিফিকেটধারী নয়, তাদের প্রত্যাশা পুরনের সক্ষমতাসম্পন্ন দক্ষ মানুষদের খুঁজে বের করে চাকুরি দিচ্ছে। বিশ্বায়নের যুগে এই ঢেউ আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়তে সময় নেবে না। তাই আমাদের সন্তানদের কেবল শিক্ষা সনদ নয়, জাতীয় যোগ্যতা কাঠামোয় অবস্থান করে নেয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে, সহায়তার হাত বাড়াতে হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেলেও নতুন কারিকুলামে প্রবেশ আনন্দঘন করার জন্য এটি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সাথে জড়িতদের পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিলো। তার সুযোগ নিয়েই শিক্ষা ব্যবসার সাথে যুক্ত বিভিন্ন স্বার্থবাদী মহল আজ অভিভাবক ও জনগণের মধ্যে এই কারিকুলাম সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াতে সক্ষম হচ্ছে। একটি জিনিস রান্না করার আগেই তার সুঘ্রাণ ছড়িয়ে দিয়ে সকলের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করার কৌশলটি এক্ষেত্রে গ্রহণ করা হয়নি। কারিকুলাম প্রণয়ন করার পাশাপাশি যদি এই কারিকুলামের সুবিধা এবং ইতিবাচক পরিবর্তন সম্পর্কে ফাইভ স্টার হোটেলের পরিবর্তে মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রোগ্রাম নেয়া হতো, তাহলে আজকের এই বিভ্রান্তি হয়তো এড়ানো যেতো।
আমাদের বিশেষজ্ঞগণ কারিকুলাম প্রণয়নে সক্ষম হলেও এটির বিস্তরণ কর্মকৌশল নির্ধারণে গতানুগতিকতার বাইরে আসতে পারেননি। ফলে আমজনতার বোধগম্যতাকে লক্ষ্য করে প্রচার প্রচারণার পরিবর্তে “শিক্ষা এলিট”দের নিয়ে জ্ঞানগর্ভ প্রেজেন্টেশন দিয়েই নিজেদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন।
আজ এই ব্যর্থতার ছিদ্রপথ দিয়েই শিক্ষার রূপান্তরের সোনালী বাগানে শিক্ষা বাণিজ্যের কাল কেউটেরা প্রবেশ করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতির আশংকা উড়িয়ে দিতে শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করতেও পিছপা হবে না। কোচিং ও টিউশনি বাণিজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা এই কাজে তাদের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। এজন্যই আমরা দেখছি, রাতারাতি স্যোশাল মিডিয়ার গ্রুপ তৈরি করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
স্কুলগুলোর সামনে ভূঁয়া অভিভাবকদের দিয়ে প্রকৃত অভিভাবকদের বিভ্রান্ত ও বিক্ষুব্ধ করার অপচেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক কানেকশনগুলো সক্রিয় করা হচ্ছে। এই অপচেষ্টা রুখে দেয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী সরব হলেও শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষা ব্যবস্থাপকরা অনেকটাই নিরব। অথচ শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত এসকল ব্যক্তিবর্গই রূপান্তরিত কারিকুলাম প্রণয়নের সাথে যুক্ত ছিলেন। এই কারিকুলাম বাস্তবায়নের দায়িত্বও শিক্ষক ও পেশাজীবীদেরই পালন করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কারিকুলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেটগুলো চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি সম্মানিত অভিভাবকদের সচেতন করার জন্য শিক্ষা বিভাগকে সমগ্র শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য সবার আগে সম্মানিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে তারা জীবন ধারণের জন্য টিউশন কোচিং এর উপর নির্ভরতা কমাতে পারেন।
আমাদের শিক্ষার্থীদের কাঁধ থেকে পাঠ্য বই, নোট বই, গাইড বইয়ের যে অমানবিক বোঁঝা নামিয়ে এনেছি সেটি আবারও তুলে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে শিক্ষা অর্জনের যেই আনন্দঘন চর্চা শুরু হয়েছে সেটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা যে মানসিক হতাশায় পতিত হবে, তার পরিণতি হবে ভয়ংকর। আমাদের অভিভাবকদের এই সত্যটি উপলব্ধি করতে হবে। নতুন ব্যবস্থার ভুলত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে এটিকে আরো সুসংহত ও সম্প্রসারিত করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের সন্তানরাও বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে দেশপ্রেমিক, সমাজ সচেতন, আধুনিক ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। এই স্বপ্নের পথে অভিভাবক, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, পেশাজীবী, নাগরিক সকলেকে নিয়ে হেঁটে যাবার জন্য জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে।
# অধ্যাপক মামুন উল হক
huqmamunul@yahoo.com